কুড়িগ্রামে বন্যায় পানিবন্দি ৬০ হাজার মানুষ, পৌঁছাচ্ছে না পর্যাপ্ত সহায়তা

নিজস্ব প্রতিবেদক

নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকায় কুড়িগ্রামে সার্বিক বন্যার পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। তিনটি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় প্লাবিত হয়েছে সাতটি উপজেলার দেড় শতাধিক চর ও দ্বীপচর। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৬০ হাজার মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিকাল ৩টায় ব্রহ্মপূত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ৬৯ সেন্টিমিটার ও হাতিয়া পয়েন্টে ৭৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বিপৎসীমা বরাবর বইছে ধরলার পানি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নবেজ উদ্দিন সরকার জানান, জেলার ১০৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে পাঠদান বন্ধ রয়েছে ৫০টি স্কুলে। চলতি মৌসুমে নদী ভাঙনের শিকার হওয়ায় দুটি স্কুল অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এক হাজার ৪০০ হেক্টর জমির পাটসহ নিমজ্জিত হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমির ফসল।
বন্যায় সড়ক নিমজ্জিত হওয়ায় অনেক এলাকায় গ্রামীণ সড়ক ভেঙে গেছে। এতে যাতায়াতের ভোগান্তিতে পড়েছে চর এলাকার মানুষ। সংযোগ সড়ক ডুবে যাওয়ায় চিলমারী-রৌমারী ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে।

অনেকেই নিজ বাড়িতে মাচা করে বা আঙিনায় নৌকা নিয়ে বসবাস করছে। কেউ কেউ গবাদি পশু নিয়ে চলে গেছে উঁচু স্থানে। বন্যাকবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার ও গো-খাদ্যের সংকট তীব্র হয়ে উঠছে।

জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে খাদ্য সহায়তা প্রদান শুরু হলেও সব এলাকায় সহায়তা না পৌঁছার অভিযোগ করেছে বানভাসী মানুষ।
ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু জানান, এই ইউনিয়নে সাড়ে ৪০০ পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়লেও এখন পর্যন্ত দেড়শ পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে। বাকীদের দ্রুত সহায়তা দেয়া প্রয়োজন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ১৭৬ মে. টন চাল ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। আরো ৫০০ মে. টন চাল ও নগদ ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। দ্রুত এ সব ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

//রোকনুজ্জামান মানু//

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পাতার শুরুতে