খাবার টেবিলে গরুর মাংস দেখলে অনেকেই নিজেকে সামলাতে পারেন না। বিশেষ করে ইদ উল আযহার এই সময় নিজেকে সামলানো যেন আরো কঠিন। কিন্তু আমাদের জানা উচিত গরুর মাংস বা রেড মিট ঠিক কতটুকু খাওয়া উচিত, সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটা!
প্রথমেই জানবো অতিরিক্ত মাংস খেলে যেসব স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। —
রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ সালমা পারভীন বলেছেন, মাংস বেশি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বা ডায়েরিয়া হতে পারে৷ উচ্চ রক্তচাপের পাশাপাশি শরীরে ইউরিক এসিডের পরিমাণও বেড়ে যায়৷ এসব ছাড়াও বড় বড় রোগের সূত্রপাত ঘটতে পারে। যেমন-
★ রেডমিট হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়
★ বেড়ে যায় স্ট্রোকের ঝুঁকি
★ নানা ধরণের রোগে ফুসফুস আক্রান্ত হতে পারে
★ পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদান্ত্র, কোলন, প্রোস্টেট ও স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরি হয়।
★ পিত্তথলিতে পাথর, পেপটিক আলসারসহ কিডনীর জটিলতা হতে পারে
★ আর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়
পুষ্টিবিদ সালমা পারভীন মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে বলেছেন। যারা নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করেন তাদের প্রোটিন গ্রহণের মাত্রা বেশি থাকে। ৬০ কেজি ওজনের ব্যক্তির প্রোটিন গ্রহণের আদর্শ মাত্রা ৬০ গ্রাম। তবে একজন পূর্ণবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তি প্রতিদিন ১০০ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ নিরাপদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে কারোরই ৭০ গ্রামের বেশি প্রোটিন খাওয়া উচিত নয়।
দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে গরুর মাংস খাওয়ার আগে আরো কিছু তথ্য জেনে রাখুন:
★ গরুর মাংসে অ্যানাফিল্যাক্সিস নামে সৃষ্ট যৌগ আছে, যা অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
★ যাদের থ্যালাসসেমিয়া বা হেমাক্রোটোসিস নামে রক্তরোগ আছে, তারা গরুর মাংস খাবেন না।
★ যাদের বাতব্যথা বা ইউরিক অ্যাসিড বেশি আছে, তারাও গরুর মাংস এড়িয়ে চলুন।
এছাড়া, কিডনী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রোটিনের পরিমাণ কমাতে হয়। তাই কিডনী রোগীরা গরুর মাংস খাবেন কম পরিমাণে।
হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের গরু ও খাসির মাংস খাওয়া একেবারেই ভালো নয়।
উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি থাকলে গরু-খাসির মাংস না খাওয়াই উত্তম। তবে উৎসবের দিন খেতে চাই খুব অল্প পরিমাণে খেতে পারেন।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের তৈলাক্ত ও চর্বিজাতীয় খাবার কম খেতে হয়।
যাদের রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি, তাদের গরুর মাংস না খাওয়াই ভালো। ইদে খাবার টেবিলে মাংসের পরিমাণ বেশি থাকলে অবশ্যই সাথে সবজি, সালাদ এসব রাখবেন এবং যেকোনো রোগ, অস্বস্তি থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে মাংস খাবেন।
এই ইদে সবাই সুস্থ থাকুন। এ ধরণের আরো তথ্য পেতে অবশ্যই নিয়মিত উলিপুর পোস্ট ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। যুক্ত হোন ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামে। সাবস্ক্রাইব করুন উলিপুর পোস্ট ইউটিউব চ্যানেল।
মো. জামিউল ইসলাম,
সম্পাদক ও প্রকাশক, উলিপুর পোস্ট