বিশেষ প্রতিবেদক
অবশেষে কুড়িগ্রামের মানুষ আশার আলো দেখছে। দারিদ্র্যপীড়িত এ অঞ্চলে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের দাবি দীর্ঘ দিনের। এরই প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে কুড়িগ্রামের এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এ জেলার মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে গড়বেন অর্থনৈতিক অঞ্চল। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ও ভুটান সরকারের যৌথ উদ্যোগে কুড়িগ্রামে জিটুজি ভিত্তিক প্রস্তাবিত ‘ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ স্থাপন করা হবে।
প্রস্তাবিত স্থান পর্যবেক্ষণে রবিবার (১০ মার্চ) ভুটানের একটি প্রতিনিধি দল দুই দিনের সফরে কুড়িগ্রাম আসছেন। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জেলার ধরলা ব্রিজের পূর্বে কুড়িগ্রাম-ভূরুঙ্গামারী সড়কের পূর্ব পাশে অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সদরের ভোগডাঙা ইউনিয়নের মাধবরাম মৌজার অন্তর্ভুক্ত ১৩৩ দশমিক ৯২ একর খাস জমি অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) হস্তান্তর করেছে জেলা প্রশাসন। ধরলা ব্রিজের পূর্ব প্রান্তে সৈয়দ ফজলুল করিম (রহ.) জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার উত্তর-পূর্ব দিকে এই খাস জমির অবস্থান।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ১৩৩ দশমিক ৯২ একর খাস জমি বেজা কর্তৃপক্ষের কাছে বন্দোবস্ত দিয়েছি। আরও ৮০ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে।’
জানা গেছে, ২০২৩ সালের মে মাসে লন্ডনে ভুটানের রাজা ও রানির সঙ্গে এক দ্বিপক্ষীয় সভায় কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভুটান সরকারের একটি প্রতিনিধি দল রবিবার (১০ মার্চ) কুড়িগ্রাম সফরে আসছেন। চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েনসিল। বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন ভুটানের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে থাকবেন বলেও জানা গেছে। এ সময় প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান, সোনাহাট স্থলবন্দর ও চিলমারী নৌবন্দর পরিদর্শনের কথা রয়েছে তাদের।
কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দর হয়ে ভুটানের ফুন্টশোলিং এলাকার দূরত্ব কম। সহজে যাতায়াত করা যায়। ফলে ভুটানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হলে জেলার আর্থ-সামাজিক অবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। নতুন নতুন ব্যবসা-বাণিজ্যের দ্বার উন্মুক্ত হবে। পাশাপাশি শিক্ষা-সংস্কৃতির প্রসার ঘটবে। সর্বোপরি জেলার স্থল সীমান্ত পথে বহুল প্রতীক্ষিত ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালু হবে।
/রিগান/জামিউল/